১৭ মে ২০২৪, ০৩ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫
`


নিয়ম মানছেন না রাইডাররা

-

নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গতকাল রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোয় হাতেগোনা কিছু গণপরিবহনের দেখা মিলেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা রাজধানীর ভেতরে ও দূরপাল্লার সব গণপরিবহন বন্ধ রাখলেও গতকাল থেকে যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত গাড়ি না থাকায় নগরের মধ্যে ও স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য প্রধান বাহনের জায়গা করে নিয়েছে রিকশা ও রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। আর এই সুযোগে রিকশার ভাড়াও হাঁকছে দ্বিগুণের কাছাকাছি। আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিল বরাবরের মতোই লাগাম ছুট। মিটারের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হয় যাত্রীদের কাছ থেকে।
অন্য দিকে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করে যারা চলাচল করেছেন তাদের ভোগান্তির শেষ ছিল না। যারা মোটরসাইকেলে যাতায়াতে অভ্যস্ত তাদেরও পোহাতে হয়েছে দুর্ভোগ। অ্যাপে না গিয়ে ফায়দা লুটেছেন চালকেরা। চুক্তিতে ভাড়া নেয়া হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
ধানমন্ডি সায়েন্স ল্যাব থেকে সকালে মোটরসাইকেলে করে মতিঝিলে অফিসে যান নাজমুস সালেহিন। তিনি জানান, তার খরচ হয়েছে ২২০ টাকা। মোবাইল ইন্টারনেটে ধীরগতির ফায়দা নিচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকেরা। রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কাজ না করায় তারা চুক্তিতে সাধারণ মানুষের গন্তব্যে যেতে রাজি হচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু ভাড়া হাঁকেন দ্বিগুণেরও বেশি। প্রেস ক্লাব থেকে নিউমার্কেট যাবেন ব্যবসায়ী সাইফুল। এক মোটরসাইকেল চালকের পাশ দিয়ে যেতেই জিজ্ঞাসা করলেন কোথায় যাবেন? নিউমার্কেটের কথা শুনে ভাড়া চাইলেন ২৫০ টাকা। জবাবে সাইফুল বলেন, এ কেমন অরাজকতা! অবশেষে হেঁটেই গন্তব্যের পথে রওনা হন। গতকাল বিকেলে অফিস ছুটির পরও দেখা গেছে একই চিত্র। কেউ বাড়ি ফিরছেন বিআরটিসি বাসে ঝুলতে ঝুলতে, কেউ রিকশায়, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউবা সিএনজিতে। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোয় ছিল রিকশার বাধাহীন চলাচল। সচরাচর এসব সড়কে রিকশা চলতে দেয়া হয় না। সকালে অফিসগামী অনেকেই রিকশা করে অফিস গেছেন। কিন্তু তাদের গুনতে হয়েছে বেশি ভাড়া।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রবিউল জানান, কয়েক দিন ধরে মোহাম্মদপুর থেকে গুলশান যাচ্ছেন রিকশায়। তবে দূরত্ব বেশি হওয়ায় ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে। এতে খরচ হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি টাকা। প্রতিদিন যাওয়া-আসা বাবদ ৪০০-৫০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে এই খরচের পরেও খুশি রবিউল। কারণ জীবনের নিরাপত্তা যেখানে নেই সেখানে টাকা দিয়ে কী হবে?
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা বলছেন, তারা চাইলেও রাস্তায় পরিবহন নামাতে পারছেন না। নামালেই নানা অজুহাতে ভাঙচুর করা হচ্ছে। এখনো তারা সড়কে নিরাপদ মনে করছেন না। তাদের অভিযোগ, সঠিক কাগজপত্র থাকার পরেও অনেক পরিবহন ভাঙা হয়েছে। গত কয়েক দিনে অন্তত ৪০০ পরিবহন ভাঙা হয়েছে। পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে আরো অন্তত আটটি পরিবহন। হামলার শিকারও হয়েছেন অনেক শ্রমিক। এ অবস্থায় রাস্তা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা গাড়ি চালাবেন না।

 


আরো সংবাদ



premium cement